সারাহ’র কিডনিতে ‘ভালো’ আছেন দুই রোগী

  বিশেষ প্রতিনিধি    21-01-2023    176
সারাহ’র কিডনিতে ‘ভালো’ আছেন দুই রোগী

সারাহ ইসলাম (বাঁয়ে), অপারেশন থিয়াটারে রোগীর দেহে সারাহ’র দেওয়া কিডনি প্রতিস্থাপন করছেন চিকিৎসকরা (ডানে)

দেশের প্রথম সফল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট তথা ব্রেন ডেথ রোগীর অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। আর এই কাজে নিজের কিডনি দিয়ে ইতিহাস রচনা করেছেন ২০ বছর বয়সী সারাহ ইসলাম। তার দুইটি কিডনি দুজনের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তারা বর্তমানে স্বাভাবিক আছেন এবং বেশ ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় বিএসএমএমইউ’র কেবিন ব্লকে কিডনি অপারেশন থিয়েটারে এ সফল অপারেশন হয়। বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে দুটি চিকিৎসক দল এ অপারেশনে অংশ নেন।

সারাহ’র দুটি কিডনির একটি মিরপুরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী শামীমা আক্তারের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ সফল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে বিএসএমএমইউ’র কিডনি অপারেশন থিয়েটারে। সারাহ’র অপর কিডনিটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে কিডনি ফাউন্ডেশনে হাসিনা আক্তার নামে এক নারীর দেহে।

বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা.হাবিবুর রহমান দুলাল শনিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুটি কিডনির কন্ডিশন খুবই ভালো আছে। আমরা যে রগগুলো জোড়া লাগিয়েছি, সেটির একটা পরীক্ষা হয়, সেখানেও দেখা গেছে— সেগুলো ভালো আছে। তবে বিএসএসএমইউ’র রোগীর রক্তচাপ ধীরে ধীরে বাড়ছে, কিডনি ফাউন্ডেশনের রোগীর এখন রক্তচাপ তৈরি হয়নি। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুত তৈরি হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের পর ইউরিন তৈরি হতে একটু সময় নেয়। জীবিত ব্যক্তির হলে সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায়।’

অঙ্গদাতা সারাহ ১০ মাস বয়সে টিউমার স্কেলেলিস রোগে আক্রান্ত হন। এ রোগ নিয়ে দীর্ঘদিন লড়াই করেন। এ অবস্থায় তিনি অগ্রণী গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলভমেন্ট অলটারনেটিভে (ইউডা) ফাইন আর্টসে ভর্তি হন। সাহারা ফাইন আর্টসের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় বিএসএমএমইউ’র কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রয়াত সারাহ’র জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সারাহ ইসলামের কর্নিয়া দুটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ ২৩-২৫ বয়সী সুজন নামে যুবকের চোখে এবং কমিউনিটি অপথালমোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান ৫৬ বছর বযসী ফেরদৌস আক্তার নামে এক নারীরে চোখে প্রতিস্থাপন করেন।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-এর আরও খবর