শরীরে কান্না করার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে গাজার শিশুরা : ইউনিসেফ

  বিশেষ প্রতিনিধি    19-03-2024    60
শরীরে কান্না করার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে গাজার শিশুরা : ইউনিসেফ

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৭২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। তাদের এই বর্বর হামলায় ১৩ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া বেঁচে থাকা শিশুরা চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কান্না করার মতো শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে তারা। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) এ তথ্য জানিয়েছে। খবর : আল জাজিরা

রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজে এক সাক্ষাতকারে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, ‘আরও হাজার হাজার শিশু আহত হয়েছে বা তারা কোথায় আছে তাও আমরা নির্ধারণ করতে পারছি না। তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকতে পারে … আমরা বিশ্বের অন্য কোনও সংঘাতে শিশুদের মধ্যে এতো মৃত্যুর হার দেখিনি।’

তিনি বলেন, “আমি হাসপাতালের একটি শিশু ওয়ার্ডে গিয়েছিলাম। ওই ওয়ার্ডের শিশুরা মারাত্মক রক্তশূন্যতা আর অপুষ্টিতে ভুগছে। কিন্তু পুরো ওয়ার্ড একদম শান্ত ছিল। কারণ, অসুস্থ শিশুদের শরীরে কান্নার মতো শক্তি ছিল না।” রাসেল আরও বলেন, “গাজায় আরও হাজারো শিশু আহত হয়েছে। কিন্তু এসব শিশু কোথায় আছে আমরা সেটাও জানি না।” ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির দুর্ভিক্ষের শিকার হয়েছে। তাদের সাহায্য ও সহায়তার জন্য গাজায় সহায়তাবাহী ট্রাকগুলো নিয়ে যাওয়া ছিল ‘বিশাল আমলাতান্ত্রিক চ্যালেঞ্জ’।

এদিকে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, গত ৪ বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ-সংঘাতে যত শিশু নিহত হয়েছে গাজা যুদ্ধে তার চেয়ে বেশি শিশু নিহত হয়েছে।

মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, ‘বিস্ময়কর। গাজায় মাত্র ৪ মাসে নিহত শিশুর সংখ্যা বিশ্বজুড়ে ৪ বছরের যুদ্ধে নিহত শিশুর সংখ্যার চেয়ে বেশি।’

ইউএনআরডব্লিউএ আরও জানিয়েছে অনুসারে, উত্তর গাজায় দুই বছরের কম বয়সী প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু এখন তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে। সংস্থাটি আরও সতর্ক করেছে, পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরলস ইসরায়েলি বোমা হামলার সম্মুখীন হওয়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী শাসকের পরিকল্পনায় ১৯১৭ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদিদের অভিবাসনের মাধ্যমে আজকের ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্রটি তৈরি করা হয় এবং ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এর অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের জন্য তাদের বিরুদ্ধে বহু গণহত্যা এবং জাতিগত নিধন অভিযান চালিয়েছে এবং এখনও চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

আন্তর্জাতিক-এর আরও খবর