রোজা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী?

  বিশেষ প্রতিনিধি    31-03-2023    141
রোজা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী?

উত্তর-আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, রোজা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনাহার-অর্ধাহারের এই চর্চা শরীর ভালো রাখে। রোগব্যাধি থেকে মুক্ত রাখে। হজরত মুহাম্মদ (স) বলেছেন, প্রতিটি বস্তুর জাকাত আছে; শরীরের জাকাত রোজা।

কিছু নিয়মনীতি অনুসরণ করলে রোজায় শারীরিক সুফল এবং কল্যাণ অর্জন হয়। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং শিরা-উপশিরাগুলো সচল রাখতে খাবারের প্রয়োজন। তবে এই খাবার যদি নিয়মিত এবং পরিমিত না হয়, তা হলে শরীরে শক্তি জোগানোর পরিবর্তে রোগ সৃষ্টি করে। এই রোগের উপসর্গ ও কারণগুলো নবীজি (স) বহু বছর আগে বলে গেছেন। তিনি বলেন, রোগের কেন্দ্রবিন্দু হলো পেট, অতিরিক্ত খাদ্যাভ্যাস এড়িয়ে চলা রোগের আরোগ্যতা। বছরব্যাপী অপরিমিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে যে অতিরিক্ত মেদ জমে থাকে তা রোজা রাখার ফলে দূরীভূত হয়।

সময়মতো সাহরি খাওয়া যেমন সুন্নত তেমনি সময়মতো ইফতার করাও সুন্নত। নবীজি (স) এমনই করতেন। তিনি বলেন, তোমরা সাহরি খাও; কারণ এতে বরকত রয়েছে। খেজুর দিয়ে ইফতার করা নবীজির (স) সুন্নত।

মোটকথা রোজায় শারীরিক বেশ উপকারিতা রয়েছে। আছে সুস্থ থাকার মন্ত্রও। তবে কেউ যদি রোগী হয়, কোনো ডাক্তার যদি রোজা রাখতে মানা করেন, তা হলে সে কী করবে?

কোরআনুল কারিম বলছে, যে কেউ রমজান মাস পাবে, সে যেন রোজা পালন করে। আর যে রোগাক্রান্ত অথবা সফরে থাকে সে যেন অন্য সময়ে আদায় করে নেয়। সূরা বাকারা : ১৮৫

কোরআনুল কারিম আরও বলেছে, আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, যা কষ্টকর তা চান না। সূরা বাকারা : ৮৫

এই দুই আয়াত সামনে রেখে ইসলামি ফেকাহবিদদের অভিমত হলো, কেউ প্রকৃতপক্ষে রোগাক্রান্ত হলে, বিশেষজ্ঞ দ্বীনদার ডাক্তার রোজা পালনে নিষেধ করলে, রোজা না রাখার অনুমতি আছে। এ ছাড়াও রোজা রাখলে রোগ প্রকট হবে বা সুস্থ হতে দেরির আশঙ্কা হলেও বিরত থাকতে পারবে। পরে সময় সুযোগ করে কাজা আদায় করে নিবে। কাফ্ফারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। আবার কেউ যদি শক্তিহীন বৃদ্ধ হয়, রোজা রাখার সামর্থ্যবান না হয়, শরীরের ক্ষতি হয় তার জন্যও রোজা না রাখার অনুমতি আছে। পরে যদি পালনের সুযোগ আসে রোজা আদায় করবে। বার্ধক্য আরও বৃদ্ধি পেলে বা সক্ষমতা না এলে অবশ্যই কাফ্ফারা আদায় করবে। কাফ্ফারা মানে মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে পেট ভরে খানা খাওয়ানো বা সদকাতুল ফিতর পরিমাণ দান করা। শক্তিহীন বৃদ্ধের ছাড়ের অনুমতি প্রসঙ্গে কোরআনের ভাষ্য হলো, তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের প্রতি দয়াশীল। (সূরা নিসা ২৯)

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না। সূরা বাকারা : ১৯৫

কেউ রোগী না হয়ে রোগের ভান করলে, বৃদ্ধ সামর্থ্যবান হয়ে রোজা না রাখলে জঘন্য অপরাধ হবে। কবিরা গোনাহর শাস্তি হবে।

মুদাররিস : শেখ জনূরুদ্দীন (রহ) দারুল কুরআন মাদরাসা, চৌধুরীপাড়া, ঢাকা

ধর্ম ও জীবন-এর আরও খবর