চলতি বছর দেশে ডেঙ্গু যে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে তা ২০১৯ সালে হয়ে যাওয়া মারাত্মক ডেঙ্গু পরিস্থিতির চেয়েও ভয়াবহ। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিনগুণ হয়ে ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন ছিল। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে যা ছিল ১৬ হাজার ২৫৩ জন।
বিগত বছরগুলোর মধ্যে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০২২ সালে। ওই বছর এই রোগে মারা যান ২৮১ জন। অথচ চলতি বছরের (২০২৩ সালের) ১০ আগস্ট পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫২ জন। এমন অবস্থায় চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। একই সঙ্গে চলতি আগস্ট মাসের মধ্যে দেশে ডেঙ্গুরোগী এক লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের এক সেমিনারে এ তথ্য উঠে আসে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনশন অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসাম) অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) ডা. সানয়া তাহমিনা।
ডেঙ্গুর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও ভয়বহতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাহলে আমরা কী মনে করবো এটা ডেঙ্গু মহামারি। আগস্টের মধ্যে এক লাখের ওপরে কেস (মোট ডেঙ্গুরোগী) হয়ে যাবে। এই কথা যদি এখন বলা হয়- কালকেই পত্রিকায় বিরাট বিরাট করে বের হবে আমরা এখন ডেঙ্গু মহামারিতে আছি। সেটার জন্য অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। সেজন্য সরাসরি কোনো উত্তর দিচ্ছি না।
হাসপাতালের পরিস্থিতি বর্ণনা করে ডা. সানয়া তাহমিনা বলেন, আমরা জানি মুগদা হাসপাতাল রোগী নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ তারা আর পারছে না। প্রাইভেট হাসপাতালেগুলোতেও আসন খালি নেই। প্রাইভেট ক্লিনিকে যদি খুব খারাপ অবস্থায় রোগী যাচ্ছে তাদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। সেজন্য আমরা দেখছি ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা হাসপাতালে বেশি মৃত্যু। এখন দোষ-গুণ না দিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমাদের এই নগরীতে এখন এমন কোন জায়গা নেই, যেখানে কন্টেইনার নেই। গণপরিবহন, হাসপাতাল, ফ্ল্যাট, পুলিশের থানায়, ডাম্পিং স্টেশনে প্রচুর মশার লার্ভা পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলো পরিষ্কারে উদ্যোগে নেওয়া হয় না। যে যার দায়িত্ব পালন করছে না। লার্ভিসাইড করতে হবে, সোর্স রিডাকশন করতে হবে। এখন যে এপিডেমিক সিচুয়েশনে বা ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনে এই অবস্থায় আমাদের এডাল্টিসাইড করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুহাম্মাদ মুশতাক হোসেইন বলেন, স্বাস্থ্যগত কারণে বাংলাদেশে কখনো ইমার্জেন্সি ঘোষণা করা হয়নি। রাজনৈতিক কারণে হয়েছে। এপিডেমিক হয়েছি কী হয়নি বিষয়টা স্পর্শকাতর। আগে কলেরা, প্লেগে শত শত মানুষ মারা যেত। গ্রামকে গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। হাজার হাজার মানুষ মারা গেলে এপিডেমিক কথাটা ব্যবহার হবে, বিষয়টি তা নয়।
সোয়াইন ফ্লুতে সারা বিশ্বের লাখ লাখ, কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সেটা ছিল প্যান্ডামিক। কিন্তু এতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। যখন টাইম, প্লেস, পারসন প্রেক্ষিতে যে রোগ দ্বারা আনইউজ্যাল মরবিডি, মর্টালিটি হয় সেটা যদি ওয়াইড এরিয়ায় হয়। একটা দুইটা জায়গায় হলে সেটা আউটব্রেক। ওয়াইড এরিয়ায় হলে এপিডেমিক অবশ্যই বলবো। এটা নিয়ে বাদানুবাদ করাটা বিব্রতকর।
কীটতত্ত্ববিদ ডা মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, মনিটরিং, মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বায়োলজিক্যালি কন্ট্রোলের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবাইদুর রহমান বলেন, ষাটের দশকে যেই ঢাকা ফিভার হয়েছে, সেটা এখন বাংলাদেশ ফিভার হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে। ডেঙ্গুকে আমরা একেবারে বিনাশ করতে পারবো না। এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, মহাসচিব ডা. এস এম শাহিদুল্লাহ, সভাপতি প্রোফেসর ডা. শাহ মনির হোসাইন প্রমুখ।
আগস্টে ডেঙ্গুরোগী এক লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা স্বাস্থ্যবিদদের
চলতি বছর দেশে ডেঙ্গু যে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে তা ২০১৯ সালে হয়ে যাওয়া মারাত্মক ডেঙ্গু পরিস্থিতির চেয়েও ভয়াবহ। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিনগুণ হয়ে ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন ছিল। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে যা ছিল ১৬ হাজার ২৫৩ জন।
বিগত বছরগুলোর মধ্যে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০২২ সালে। ওই বছর এই রোগে মারা যান ২৮১ জন। অথচ চলতি বছরের (২০২৩ সালের) ১০ আগস্ট পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫২ জন। এমন অবস্থায় চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে ভয়াবহ বলছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। একই সঙ্গে চলতি আগস্ট মাসের মধ্যে দেশে ডেঙ্গুরোগী এক লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের এক সেমিনারে এ তথ্য উঠে আসে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনশন অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসাম) অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) ডা. সানয়া তাহমিনা।
ডেঙ্গুর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও ভয়বহতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাহলে আমরা কী মনে করবো এটা ডেঙ্গু মহামারি। আগস্টের মধ্যে এক লাখের ওপরে কেস (মোট ডেঙ্গুরোগী) হয়ে যাবে। এই কথা যদি এখন বলা হয়- কালকেই পত্রিকায় বিরাট বিরাট করে বের হবে আমরা এখন ডেঙ্গু মহামারিতে আছি। সেটার জন্য অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। সেজন্য সরাসরি কোনো উত্তর দিচ্ছি না।
হাসপাতালের পরিস্থিতি বর্ণনা করে ডা. সানয়া তাহমিনা বলেন, আমরা জানি মুগদা হাসপাতাল রোগী নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ তারা আর পারছে না। প্রাইভেট হাসপাতালেগুলোতেও আসন খালি নেই। প্রাইভেট ক্লিনিকে যদি খুব খারাপ অবস্থায় রোগী যাচ্ছে তাদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। সেজন্য আমরা দেখছি ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা হাসপাতালে বেশি মৃত্যু। এখন দোষ-গুণ না দিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমাদের এই নগরীতে এখন এমন কোন জায়গা নেই, যেখানে কন্টেইনার নেই। গণপরিবহন, হাসপাতাল, ফ্ল্যাট, পুলিশের থানায়, ডাম্পিং স্টেশনে প্রচুর মশার লার্ভা পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলো পরিষ্কারে উদ্যোগে নেওয়া হয় না। যে যার দায়িত্ব পালন করছে না। লার্ভিসাইড করতে হবে, সোর্স রিডাকশন করতে হবে। এখন যে এপিডেমিক সিচুয়েশনে বা ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনে এই অবস্থায় আমাদের এডাল্টিসাইড করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুহাম্মাদ মুশতাক হোসেইন বলেন, স্বাস্থ্যগত কারণে বাংলাদেশে কখনো ইমার্জেন্সি ঘোষণা করা হয়নি। রাজনৈতিক কারণে হয়েছে। এপিডেমিক হয়েছি কী হয়নি বিষয়টা স্পর্শকাতর। আগে কলেরা, প্লেগে শত শত মানুষ মারা যেত। গ্রামকে গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। হাজার হাজার মানুষ মারা গেলে এপিডেমিক কথাটা ব্যবহার হবে, বিষয়টি তা নয়।
সোয়াইন ফ্লুতে সারা বিশ্বের লাখ লাখ, কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সেটা ছিল প্যান্ডামিক। কিন্তু এতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। যখন টাইম, প্লেস, পারসন প্রেক্ষিতে যে রোগ দ্বারা আনইউজ্যাল মরবিডি, মর্টালিটি হয় সেটা যদি ওয়াইড এরিয়ায় হয়। একটা দুইটা জায়গায় হলে সেটা আউটব্রেক। ওয়াইড এরিয়ায় হলে এপিডেমিক অবশ্যই বলবো। এটা নিয়ে বাদানুবাদ করাটা বিব্রতকর।
কীটতত্ত্ববিদ ডা মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, মনিটরিং, মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, বায়োলজিক্যালি কন্ট্রোলের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবাইদুর রহমান বলেন, ষাটের দশকে যেই ঢাকা ফিভার হয়েছে, সেটা এখন বাংলাদেশ ফিভার হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে। ডেঙ্গুকে আমরা একেবারে বিনাশ করতে পারবো না। এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, মহাসচিব ডা. এস এম শাহিদুল্লাহ, সভাপতি প্রোফেসর ডা. শাহ মনির হোসাইন প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক
এ এম জি ফেরদৌস
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক
নাহিদুল ফাহিম
প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা
ইঞ্জি. মেহেদী হাসান |
প্রধান কার্যালয়
পূর্ব লিংক রোড, ঝিরংঝা, কক্সবাজার
মোবাইল
০১৮১৯-৫০২-৩২২
ই-মেইল beachnews24@gmail.com |
প্রিন্টের তারিখ ও সময়: October 7, 2024, 11:35 pm