সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসছে আ.লীগ

  বিশেষ প্রতিনিধি    27-10-2022    140
সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসছে আ.লীগ

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বৈঠকে বসছে আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্যনির্বাহী সংসদ। বৈঠকে ক্ষমতাসীন দলটির ২২তম ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের দিন-ক্ষণ চূড়ান্ত হতে পারে। এছাড়া গঠনতন্ত্র সংশোধন, প্রস্তুতিসহ সম্মেলন সংক্রান্ত উপ-কমিটিও গঠন হতে পারে। দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে বলেছেন—ডিসেম্বরে তারা দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন করবে। এদিকে, শুক্রবারের বৈঠক থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কাউন্সিলের তারিখের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

শুক্রবার বিকাল চারটায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলটির কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে বিরোধীদের কর্মসূচি মোকাবিলায় রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণের পাশাপাশি নিজেদের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগসহ মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বৈঠকে আলোচনার জন্য ১১টি এজেন্ডা রয়েছে। এর মধ্যে একটি রয়েছে সাংগঠনিক বিষয়। এখানে আমাদের আগামী জাতীয় সম্মেলনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। সম্মেলন উপলক্ষে বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠিত হবে। সম্মেলনের তারিখও হয়তো চূড়ান্ত হতে পারে।

২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলটির গঠনতন্ত্রে মৎস্যজীবী লীগকে সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা দেওয়া ছাড়া তেমন পরিবর্তন হয়নি দলটির গঠনতন্ত্রে।

শুক্রবারের বৈঠকে জাতীয় উপ-কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে—সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, ঘোষণাপত্র, দফতর, প্রচার-প্রকাশনা, স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা, মঞ্চ ও সাজসজ্জা, গঠনতন্ত্র, সাংস্কৃতিক, খাদ্য ও স্বাস্থ্য বিষয়ক উপকমিটি। এসব উপকমিটি গঠন করে দিতে পারেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রথা অনুযায়ী সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক দলীয় সভাপতি ও সদস্য সচিব সাধারণ সম্পাদক এবং কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য এ উপ-কমিটির সদস্য হয়ে থাকেন।

আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মধ্যে বেশ কয়েকটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক কর্মসূচিতে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগকে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণে নির্দেশনা দিয়েছিল। এ সংগঠনের নেতারা সেই সময় বলেছিল—দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সময় পাওয়া সাপেক্ষে তারা তারিখ নির্ধারণ করবেন। আজকের বৈঠকে সেই বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।

ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে এরই মধ্যে তৃণমূলের মেয়াদোত্তীর্ণ সাংগঠনিক শাখাগুলোর সম্মেলন করছে আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ ৪৩টি সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন শেষ করেছে দলটি। এছাড়াও তারিখ দেওয়া আছে বেশ কয়েকটি জেলার। একই সঙ্গে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা ও উপজেলার সম্মেলনও করছে দলটি। চলছে কমিটি গঠনের কাজও। বৈঠকের কার্যসূচি অনুযায়ী সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাছ থেকে সাংগঠনিক রিপোর্ট চাওয়া হয়নি।

কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও বিশদ আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। সেখানে বিরোধী বিএনপি যেসব কর্মসূচি পালন করছে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার দিকনির্দেশনা আসতে পারে বলে জানা গেছে।

বিএনপির বর্তমান কর্মসূচি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্যই পালন করছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান। তিনি বলেন, তারা তো দীর্ঘদিন ধরেই নেতাকর্মীদের ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিল, এখন তাদের উজ্জীবিত করার জন্য চমকপ্রদ কথা বলছেন।

আওয়ামী লীগ সবসময় রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—দাবি করেন দলটির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতা। তারা বলেন, আমাদের কর্মসূচি চলমান রয়েছে। তৃণমূলের সম্মেলন, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেখানে বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়ার কথা ভাবছে না দলটি। তবে আগামী শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর পুরাতন বাণিজ্যমেলার জায়গায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে। সেখানে ব্যাপক শোডাউন করে বিএনপিকে জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ফারুক খান বলেন, আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে, রাজপথে আছি, থাকব এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। যারা রাজপথ নতুন করে দখল করার কথা বলছে তাদের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার দরকার।

জাতীয়-এর আরও খবর