হাওয়া ভবনের লুটেরাদের রুখতে মাঠে থাকবে আ. লীগ: কাদের

  বিশেষ প্রতিনিধি    30-12-2022    131
হাওয়া ভবনের লুটেরাদের রুখতে মাঠে থাকবে আ. লীগ: কাদের

‘হাওয়া ভবনের মাধ্যমে লুটপাট, অর্থপাচার আর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিএনপি দেশ ধ্বংস করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রেখেছেন, যাদের রাজনীতি নষ্ট, তারা রাষ্ট্র মেরামত করবে কীভাবে?’

শুক্রবার রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

এ দিন বিএনপির গণমিছিলকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে সতর্ক অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি কর্মসূচিতে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে অগ্নি সন্ত্রাস এবং ভাঙচুরের মতো সহিংস উপাদান যুক্ত করার ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে জনগণের জানমাল রক্ষায় রাজপথে অবস্থান নেয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

শ্যামলীর সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করেন। তিনি বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির জন্য দলটি বুদ্ধিজীবী নামিয়েছে। তারা ফখরুলের মুক্তি চায়। ফখরুল তাদের বন্ধু। তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী। এই বুদ্ধিজীবীরা, এই বিশিষ্টজনেরা, এই বাংলায় যখন ১৫ আগস্ট জাতির পিতার গোটা পরিবারকে হত্যা করা হয়; সেই ঘাতকদের বিরুদ্ধে কি আপনারা বিবৃতি দিয়েছিলেন? ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপনাদের মুখের ভাষা কোথায় ছিল? জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো- কোথায় ছিল আপনাদের প্রতিবাদ?’

জঙ্গিবাদ রুখতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বাধীনতা-বিরোধীদের রুখতে হবে। হাওয়া ভবনের লুটেরাদের রুখতে হবে। তারা (বিএনপি) বলে রাষ্ট্র মেরামত করবে। বিএনপি এই রাষ্ট্র ধ্বংস করেছে। এই রাষ্ট্রের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছে। এই রাষ্ট্রে অর্থপাচার করেছে বিএনপি। পাঁচ বছরে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিএনপি। তারা নষ্ট রাজনীতি করে। যারা নষ্ট রাজনীতি করে তারা রাষ্ট্র মেরামত করতে পারে না। ধ্বংস করতে পারে।’

সারা দেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সতর্ক আছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কোন ধরনের সহিংসতায় জড়াব না। তবে আঘাত করা হলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি সাদেক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

এদিকে বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সকাল থেকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা অবস্থায় নেয়।

বিকালের সমাবেশে মোবাইল ফোনে যুক্ত হয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে বিএনপি জামায়াতের নেতৃত্বে মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রাখতে হবে। দেশের উন্নয়ন অর্জনকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। ক্ষমতার মঞ্চে উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে বাঁচাতে হবে।’

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত মানুষের জানমালের যাতে ক্ষতি করতে না পরে, কোনো মতলব যাতে হাসিল করতে না পারে এজন্য আমরা পাহারাদারের ভূমিকা পালন করছি, তারা সফল হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই বাংলাদেশকে পেছনে ফেলা যাবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো সেই জাতীয় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারিরা আবার ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, ‘বিএনপি বলেছিলো তারা ৩০ তারিখ মিছিলে-মিছিলে সয়লাব করে দেবে। কই তাদের মিছিল তো দেখলাম না! রাজপথে রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আসলে বিএনপি-জামায়াত কাগুজে বাঘ। তারা সন্ত্রাস করে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চায়। এটা আমরা হতে দিতে পারি না। এই ষড়যন্ত্রকারী, আগুন সন্ত্রাসী, মানুষ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে। এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাপ যেমন কিছুদিন পরে পরে চামড়া-খোলস বদলায়, বিএনপির জোটও কিছু দিন পরে পরে খোলস বদলায়। কোন সময় ২০ দল হয়, ১২ দল হয়, এখন বলছে ৩৩ দল। কিন্তু ৩৩ দলের মধ্যে ৩০টাকে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ আছে। কারণ কয়েকটি হাতে গোনা দল ছাড়া বাকিগুলো আসলে সাইনবোর্ড সর্বস্ব দল।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহনগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, যুব লীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা মহানর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি প্রমুখ।

এছাড়া গাবতলীতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, আব্দুল আওয়াল শামীম; দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ধর্ম সম্পাদক সারাজুল মোস্তফা রাজধানীর উত্তরায় অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেছে।

মহাখালীতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবু-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা খানমের নেতৃত্বে এবং শ‌্যামলীতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, স্বাস্থ্য সম্পাদক রোকেয়া সুলতানার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ফার্মগেটে এবং মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, আইন সম্পাদক নজিবুল্লা হীরু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা অবস্থানে ছিলো।

রামপুরা বাড্ডা ইউলুপে আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে এবং যাত্রাবাড়ীতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করে।

জাতীয়-এর আরও খবর