ছন্দ হারিয়ে বিবর্ণ বাংলাদেশ

  বিশেষ প্রতিনিধি    31-03-2023    138
ছন্দ হারিয়ে বিবর্ণ বাংলাদেশ

শকিং নয় অবশ‌্যই। তবে আয়ারল‌্যান্ড শেষ টি-টোয়েন্টি যেভাবে খেলল তাতে আরও ভালোভাবে প্রমাণিত হলো আগের ম‌্যাচগুলোতে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে বাংলাদেশ। ৬ ওভার আগে ৭ উইকেটের জয়ে আয়ারল‌্যান্ডকে কোনোভাবেই দুর্বল প্রতিপক্ষ বলার সুযোগ নেই।

ব‌্যাট-বলে দুই বিভাগে ছন্দ হারিয়ে শেষ টি-টোয়েন্টিতে স্রেফ বিবর্ণ বাংলাদেশ। অতিথিরা শুধু লড়াই করলো না, নিজেদের সামর্থ‌্যের সবকুটু উজার করে দিলো। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম‌্যাচে তাদের শারীরিক ভাষায়, মাঠের ক্রিকেটে ঘাটতি ছিল। শুক্রবার হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশনে সব পেছনে ফেলে নতুন মোড়কে তাদের দেখা মিলল।

প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে দুই’শ-এর বেশি রান তুলে বাংলাদেশ উড়ছিল। মনে হচ্ছিল, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজও তেমন কিছুর দেখা মিলবে। কিন্তু বড় আশা দেখানো বাংলাদেশ এদিন হোঁচট খেল। আগে ব‌্যাটিং করতে নেমে ১৯.২ ওভারে ১২৪ রানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। লক্ষ্য তাড়ায় ব‌্যাট হাতেও জবাব দিলো আইরিশরা। তাতে ১৪ ওভারেই ম‌্যাচ জিতে যায় অতিথিরা।

সীমিত পরিসরের সিরিজে প্রথমবার টস জিতে বাংলাদেশ। কিন্তু টস ভাগ‌্য বদলের দিনে বাংলাদেশের ম‌্যাচ ভাগ‌্যও বদলে গেল। ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল‌্যান্ডকে ২-০ হারানোর পর টি-টোয়েন্টিতে তাদেরকে হোয়াইটওয়াশ করার অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ ম‌্যাচে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে অতিথিরা পরাজয়ের ব‌্যবধান কমিয়ে আনেন।

এদিনে শুরু থেকেই ছন্দ হারায় বাংলাদেশ। উইকেট আগের দুদিনের মতো ছিল না। একটু ধীর গতির, কম বাউন্সের। ব‌্যাটসম‌্যানদের টাইমিং মেলাতে সমস‌্যা হচ্ছিল। চেনা উইকেটে ব‌্যাটসম‌্যানরা তাড়াহুড়া করেছেন। তাতেই চলে আসে বিপদ। ৪১ রানে ৫ উইকেটের পর ৬১ রানে ৭ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

নাসুম আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদকে নিয়ে এরপর বাংলাদেশকে ১২৪ রান পর্যন্ত নিয়ে যান শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ক‌্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটি তুলে ৪২ বলে ৫১ রান করেন। এজন‌্য ৫টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছিলেন। শামীমের একার লড়াই ছিল ব‌্যাটিংয়ে বাংলাদেশ দলের প্রতিচ্ছবি। বাকিরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। শামীমের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ রান করেন রনি তালুকদার। তাওহিদ হৃদয়ের ব‌্যাট থেকে আসে ১২ রান। এছাড়া শেষ দিকে নাসুম করেন ১৩ রান।

আইরিশদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের দিনে সেরা ছিলেন মার্ক আডায়ার। ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার। এছাড়া একাদশে সুযোগ পাওয়া লেগ স্পিনার ম‌্যাথু হামপ্রেয়ার্স ১০ রানে নেন ২ উইকেট। কোনো বোলারকে আজ অধিনায়ক থিতু হতে দেননি। সাত বোলার ব‌্যবহার করে প্রত‌্যেককে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বোলিং করেছেন। তাতে নিজেদের পরিকল্পনায় শতভাগ সফল তারা।

ব‌্যাটিংয়ে কোনো লড়াই করতে না পারা বাংলাদেশ বোলিংয়ে উড়ে যায় পল স্টারলিংয়ের ঝড়ে। আইরিশ অধিনায়ক মাত্র ৪১ বলে ৭৭ রান করেন ১০ চার ও ৪ ছক্কায়। কোনো বোলারকে সুযোগ না দিয়ে দিব‌্যি এগিয়ে যান তিনি। এছাড়া হ‌্যারি টেকটর ১৪ ও কুর্টিস কম্পার ১৬ রান করেন। তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও অভিষিক্ত রিশাদ হোসেন একটি করে উইকেট নেন।

বড় পরাজয়ে সিরিজ জয়ের আনন্দ কিছুটা হলেও ম্লান হয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন ইংল‌্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের পর আয়ারল‌্যান্ডকে একই ব‌্যবধানে হারাবে সেই আশায় বুক বেধেছিলেন সমর্থকরা। কিন্তু শেষটা আনন্দময় হলো না। তাতে আট আন্তর্জাতিক ম‌্যাচের পর প্রথম হারের স্বাদ পেল স্বাগতিকরা।

অন‌্যদিকে আয়ারল‌্যান্ডের আজকের জয়টা বেশ আনন্দের। কারণ, বাংলাদেশের মাটিতে প্রথমবার যে জয় পেল তারা।

খেলাধুলা-এর আরও খবর