দুর্নীতিবাজরা উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ঠেকাতে মাঠে নেমেছে: প্রধানমন্ত্রী

  বিশেষ প্রতিনিধি    23-04-2023    97
দুর্নীতিবাজরা উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ঠেকাতে মাঠে নেমেছে: প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতিবাজ ও গ্রেনেড হামলাকারীরা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ঠেকাতে মাঠে নেমেছে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, খুনি, গ্রেনেড হামলাকারী ও দুর্নীতিবাজরা আবার ক্ষমতায় গেলে দেশ ও দেশের সব উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।’

শনিবার (২২ এপ্রিল) সকালে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গণভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের পবিত্র দিনে আপনার সঙ্গে দেখা করে আমি সত্যিই খুব আনন্দ বোধ করছি। কারণ আপনারা আমার কাছের প্রিয়জন ও আত্মার আত্মীয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াবহ রাতে বাবা-মা এবং ভাইদের হারানোর পর আমি এ দেশের জনগণের ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছি।’

দেশ ও দেশের জনগণকে মায়ের মতো ভালোবাসেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে সব মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করে সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কারণ এটাই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন।’

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় ও স্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ এত বড় আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির সাক্ষী হয়ে রয়েছে। কারণ জনগণ ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে পরপর আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে। আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসানোর জন্য ও সেবা করার সুযোগ দেওয়ায় আমি মহান আল্লাহ ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বঙ্গবাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত চক্রের জড়িত থাকার ইঙ্গিত দেন এবং বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে, তারা সবকিছুই করতে পারে। আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক কারণ এ দলটি সর্বদা জনগণের সেবা করে।’

সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে আমি গর্বিত। প্রধানমন্ত্রিত্ব আমার কাছে কিছুই নয়। ক্ষমতাকে আমি জনগণের সেবা করার উপায় হিসেবে বিবেচনা করি।’

এবার ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সড়ক, মহাসড়ক, সেতু; বিশেষ করে পদ্মা সেতুসহ ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে এবারের ঈদযাত্রা সহজ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নিজ গ্রামে যাওয়া লোকজনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ায় মানুষ এখন গ্রামে গ্রামে আনন্দ উপভোগ করছে।’

প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ও গরিব-দুখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি আওয়ামী লীঘ নেতাকর্মীদেরও জনগণের প্রয়োজনে পাশে থাকার আহ্বান জানান।

শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে তার দলের নেতাকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

পরে তিনি মন্ত্রিপরিষদের সহকর্মী, বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব, সচিব ও সচিবের সম-পদমর্যাদার বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে ঈদে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় বন্ধ ছিল। প্রায় তিন বছর পর আবারও ঈদের দিনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করলেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতীয়-এর আরও খবর