কক্সবাজারের বালুখালীতে ফুটবল টুর্ণামেন্টে রোহিঙ্গা ঢল!

  বিশেষ প্রতিনিধি    15-02-2023    232
কক্সবাজারের বালুখালীতে ফুটবল টুর্ণামেন্টে রোহিঙ্গা ঢল!

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীতে ফুটবল টুর্নামেন্টে হাজার হাজার রোহিঙ্গার উপস্থিতি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়ার পাশাপাশি আতংক বিরাজ করছে ।

এদিকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম করে রোহিঙ্গাদের নিকট টিকেট বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়াকে কেন্দ্র করে বালুখালী এলাকায় দুই গ্রামবাসীর মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন দু পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

সচেতন গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বালুখালী পান বাজারের দক্ষিণ পাশে ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ফজল কাদের চৌধুরী (ভুট্টো) ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করা হয় । উক্ত খেলা দেখার জন্য হাজার হাজার রোহিঙ্গার সমাগম ঘটে। টাকা দিয়ে টিকিটের বিনিময় রোহিঙ্গারা মাঠে প্রবেশ করে।

বিশেষ করে ফুটবল খেলা দেখার নামে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ায় সচেতন নাগরিক সমাজের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

দায়িত্বরত আর্মড পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে কিভাবে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে এসে লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়ে সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন সজীব জানান, ফজল কাদের চৌধুরী ভুট্টো ফুটবল টুর্নামেন্টের নামে উপজেলা প্রশাসন কাউকে অনুমোদন দেয়নি।

এরপরও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নাম ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ড করছে কিনা আমরা খতিয়ে দেখবো।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ শে জানুয়ারি পশ্চিম বালুখালী ক্রীড়া পরিষদের ব্যানারে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমতি নিয়ে পশ্চিম বালুখালী গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। এমতাবস্থায় একটি পক্ষ “রোহিঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা নিয়ে অভিযোগ করলে চলমান টুর্নামেন্টটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ প্রশাসন।

এখন সকলের প্রশ্ন হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের উপস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার কিভাবে নতুন করে ফের ফজল কাদের চৌধুরী ভুট্টো ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হলো।

উক্ত টুর্ণামেন্টে ১০ টির মত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফুটবল টিম অংশগ্রহণ করছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে যদি একটি চলমান টুর্নামেন্ট বন্ধ করা হয়ে থাকে, তবে একই স্থানে অন্য একটি টুর্নামেন্ট অনুমোদন কিভাবে দেয় পুলিশ বা প্রশাসন। উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার বলেন, বালুখালীতে একই মাঠে একটি অনুমোদিত চলমান ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দিয়ে আরেকটি অনুমোদন বিহীন নতুন ফুটবল টুর্নামেন্ট কার ইশারায় পরিচালনা করতে দেওয়া হয়েছে? খেলার নামে আসলে এসব কি হচ্ছে? প্রতিযোগিতার পরিবর্তে প্রতিহিংসা কি কারণে ? জোর যার মুলুক তার, এমন পরিবেশ কেন?

এ ব্যাপারে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, আমার সাথে কোনো পরামর্শ না করে বালুখালীতে খেলা পরিচালনা করছে। আমি এটার বিপক্ষে কারণ এখান থেকে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করা যাচ্ছে৷

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলতে আমি এখন পাগল হয়ে গেছি৷ রোহিঙ্গারা এখন সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে৷ তারা খেলা দেখা বা বাজারের বাহানা দিয়ে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে৷

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, এ বিষয়ে অবগত হয়েছি, এ ধরণের খেলার জন্য আমাদের থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি৷ এ খেলা খুব শিগগিরই বন্ধ করে দেওয়া হবে৷

সারাদেশ-এর আরও খবর