কক্সবাজার শহরে সরাসরি আঘাত করবে না বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় মোকা

  বিশেষ প্রতিনিধি    13-05-2023    101
কক্সবাজার শহরে সরাসরি আঘাত করবে না বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় মোকা

বিধ্বংসী গতিতে ক্রমেই স্থলভাগের কাছে চলে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে তার গতিবেগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে,অতি প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ। যত ভূমির দিকে এগোতে থাকবে তত শক্তি সঞ্চয় করবে মোখা।

ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা এবং মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাতের আশঙ্কা আছে।

রবিবার সকাল ৬ টার থেকে ১৫মে সকাল ৬ টার মধ্যে কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে পারে মোকা।

মোকা কক্সবাজার জেলার উপকূলের উপর দিয়ে অতিক্রম করার সময় এই দুই উপজেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, কক্সবাজার থেকে ৬৮০ এবং মায়ানমার থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে মোকা। এর অভিমুখ থাকবে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে।

মাঝরাতে মোকা আরও শক্তি বাড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস। তবে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় একটু শক্তি হারাতে পারে মোকা।

মোকা প্রবল বেগে এগিয়ে আসলেও এটি সরাসরি কক্সবাজার শহরে আঘাত করবে না। তাই কক্সবাজার শহরে এর খুব একটা প্রভাব পড়বে না। তবে টেকনাফ সমুদ্র উপকূলে বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার। মোকার প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে বৃষ্টি হতে পারে । তবে মোকার প্রভাবে উখিয়া,টেকনাফ উপজেলা ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করবে।

প্রকৃতির এমন রুদ্র রূপে আতঙ্কিত উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরনার্থী সহ স্থানীয় মানুষ।বিশেষ করে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় তৎপরতা তুঙ্গে।

বঙ্গোপসাগরে তৈরি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে কক্সবাজারে আবহাওয়ার অবনতিও ঘটছে। শনিবার সকাল সাতটা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে কক্সবাজার-ঢাকা রুটে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রবিবার সন্ধে সাতটা পর্যন্ত এই রুটে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ মোকাবেলায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখতে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে পাহাড়ের ওপরে ও পাদদেশে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওযা হবে। এর জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের নিকটবর্তী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সতর্কতায় চলছে মাইকিং।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত-সহ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি বিষয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। সভায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার সব ধরনের প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভূমিধস ও বন্যায় প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে।অভিবাসন সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি-সহ রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির স্বেচ্ছ্বাসেবক, রেডক্রিসেন্ট-সহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকরা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, পুলিশ সেখানে সমন্বিতভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সারাদেশ-এর আরও খবর