১৮ মাস চোখের পানি ফেলেছি, সব নেতার দরজায় গিয়েছি: জাহাঙ্গীর

  বিশেষ প্রতিনিধি    17-05-2023    64
১৮ মাস চোখের পানি ফেলেছি, সব নেতার দরজায় গিয়েছি: জাহাঙ্গীর

ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরার চার মাস পর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবার তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে সোমবার (১৫ মে) কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়।

এরপর মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, দীর্ঘ তিন বছর দায়িত্ব পালন করার পর গাজীপুরের কোনো মানুষ আমার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেয়নি, শুধুমাত্র অন্য জেলার মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে আমার মেয়র পদ স্থগিত করে দিয়েছে। এরপর আদালত বলেন, পেশিশক্তি বলেন, সব জায়গায় অন্ধকারের শক্তি দিয়ে আমাকে চেয়ারে বসতে দেয়নি। আমি নীতি এবং আদর্শের জায়গায় থেকেছি কিন্তু আমার ওপর ন্যায় বিচার হয়নি। ন্যায় বিচার না পাওয়াতে আদালতে পর্যন্ত গিয়েছিলাম, কিন্তু সময় পার করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীর বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস চোখের পানি ফেলেছি। আজ আমি চোখের পানি ফেলবো না।

তিনি বলেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনোদিন আমার বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগ যায়নি। ২০২১ সালে আমি যখন দেশের বাইরে তখন একটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার বিরুদ্ধে উপস্থাপন করা হয়েছে। পরবর্তীকালে দীর্ঘ ১৮ মাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য কেন্দ্রীয় সব নেতাদের বাসায় বাসায় এবং অফিসে গিয়েছি। সবাইকে বলেছি, আমাকে একটু সত্য বলা সুযোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আপনারা কথা বলুন, না হয় আমাকে একটি সুযোগ দেন। সব নেতারাই বলেছে, তুমি কোনো অন্যায় করোনি, বিষয়টা সমাধান হয়ে যাবে, আমরা বলবো। কিন্তু দুঃখের বিষয়- জানি না প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেউ এ বিষয়টি উপস্থাপন করেছে কী না।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক এ মেয়র বলেন, আমার মায়ের টেবিল ঘড়ি মার্কায় যারা কাজ করছেন প্রশাসনের লোক তাদের বাসায় বাসায় যাচ্ছেন। এটা আপনারা আপনাদের সন্তানের মুখে বিষ ঢেলে দিচ্ছেন না? আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো মাননীয় নেত্রীকে সত্যটা জানান। তিনি সত্যটা জানুক। তার নেতাকর্মীকে আজ হয়রানি করা হচ্ছে, অবিচার করা হচ্ছে। আমার মা বলেছেন, তোমার ওপর অবিচার করা হয়েছে। ১২ লাখ ভোটার এবং ৪০ লাখ মানুষের ওপর অবিচার করা হয়েছে। মিথ্যা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা যেন প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে সেজন্য তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমি দলের সঙ্গে বেইমানি করিনি, আর করবো না। আজকে আমার রাষ্ট্রের সব পাওয়ার চলে গেছে, দলের সবাই চলে গেছে, শুধু মা-সন্তান দাঁড়িয়েছি। তারপরেও কেন কর্মীর ওপর অত্যাচার করা হয়? ক্ষমতার জন্য নয়, পদের জন্য নয়, সত্যটা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মা-সন্তান নেমেছি। আমি বলেছি, যে কোনো সময় হারিয়ে যেতে পারি, যে কোনো ক্ষতি হতে পারে। আমার মা বলেছেন, সন্তান একজন যদি চলে যায় গাজীপুরে লাখ লাখ সন্তান আছে। আজকে আমার কোনো পদ নেই, তবুই গাজীপুরের লাখো মানুষ একসঙ্গে হয়েছে।

সারাদেশ-এর আরও খবর