সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

  বিশেষ প্রতিনিধি    21-06-2023    126
সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

ভোর চুরি করে বা দেশের কোনও সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চান না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (২১ জুন) নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। সুইজারল্যান্ড ও কাতারে সাম্প্রতিক সফর নিয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ফীতি, অপপ্রচার, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেন শেখ হাসিনা।

দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেবো না

কাউকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে চায় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশের কোনও সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় (২০০১ সাল) আসতে পারতাম। এখন যদি বলি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কারও কাছে লিজ দেবো, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার কোনও অসুবিধা নাই। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল কীভাবে? তখন তো গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল। তাহলে এখন তারা দেশ বিক্রি করবে? নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়? আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, আমার হাত থেকে এই দেশের কোনও সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না।

সরকারপ্রধান বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেবো না। আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনও দেশ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে? কাউকে আক্রমণ করবে। এই ধরনের কাজ আমরা হতে দেবো না। আমরা শান্তি ও শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি।

বিএনপিসহ কিছু দল মাঠে নেমেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ১৪ বছর আমরা অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন, অপপ্রচার মোকাবিলা করেই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সেটাই মানুষ চাইবে? নাকি আবার সেই সন্ত্রাস যুগে প্রবেশ করবে, ভোট চুরি, ভোট ডাকাতির যুগে প্রবেশ করবে সেটা জনগণের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। তারা ঠিক করুক কী করবে।

নির্বাচন কাছে এলে নানা প্রচারণা চালাবে

মার্কিন কয়েকজন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন, সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন এটার প্রতিবাদ করেছে। তারা বলেছে যে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য। সেভাবে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। নির্বাচন যত কাছে আসবে আরও বেশি করে এ ধরনের প্রচারণা চালাবে তারা।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখেই চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা নিয়ে এক ধরনের অপপ্রচার শুরু হয়েছে। শুধু এটা নয়, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে নানা ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশের মানুষকে সচেতন হতে হবে। তাদের অপপ্রচারে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না।

কিছু আছে আমাদের দেশকে নিয়ে খেলবে

এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাক, উন্নতি করুক, মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা আসুক– এটা তো চায় না। তারা ক্ষমতায় থাকতে লুটেপুটে খেতো। সেই খাওয়াটা বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু তো আছে দেশের মাটি ব্যবহার করে অন্য দেশে আক্রমণ করবে। আমার দেশকে নিয়ে খেলবে। এটা তো অন্তত আমি হতে দেবো না।

দেশে অপরাধ করে বিদেশে গিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে মন্তব্য তিনি বলেন, তারা তো চিহ্নিত লোক। মানুষকে তারা বিভ্রান্ত করছে। আমি দেশবাসীকে বলবো, এই সমস্ত অপপ্রচারে কান দেবেন না, বিভ্রান্ত হবেন না। নিজেদের মনে প্রশ্ন করতে হবে, ভালো আছেন কিনা, দেশটা ভালো চলছে কিনা, দেশটা এগুচ্ছে কিনা, দেশের আরও উন্নতি হবে কিনা।

সবচেয়ে সুন্দর ফুলটা বেছে নেবো

আওয়ামী লীগ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে জনতার ক্ষমতা জনতার হাতে ফেরত দিয়েছে উল্লেখ করে দলটির প্রধান বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। কিন্তু যারা এই কথা বলছেন তারা তো কখনও জনগণের কাছে গিয়ে তৈরি না। তাদের ভোটের জন্যও তৈরি হয়নি।

দলে একাধিক প্রার্থী প্রশ্নে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশে যখন ইলেকশন হবে অনেকেই তো প্রার্থী হতে পারে। প্রার্থী যদি হয়...শত ফুল ফুটতে দিন, যে ফুলটি সবথেকে সুন্দর সেটা আমি বেছে নেবো। স্বাভাবিকভাবেই সামনে ইলেকশন এলে অনেকের প্রার্থী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকবে। এতে কোনও সন্দেহ নেই। নির্বাচনে কাকে প্রার্থী করা হবে কাকে করা হবে না এটা তো আমাদের দলের লক্ষ্য থাকে। একটা নির্বাচন যখন হয় তখন আমরা প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা, প্রার্থীর সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা এসব বিবেচনা করি। সেখানে যদি আমরা নারীদের পাই তাদের দেই। তখন একটা বিষয় এসে যায় কে জয়ী হয়ে আসতে পারবে।

নির্বাচিত সরকারপ্রধান আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবেন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়েস্টমিনস্টার টাইপের গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেইভাবে আমাদের এখানে নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালীন সময় নিয়ে আমাদের বিরোধী দল থেকে নানা প্রস্তাব। তারা এখন আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। এ পদ্ধতিটা তারাই নষ্ট করেছে, তারা রাখেনি। সেটাকে তারা আবার ফেরত চাচ্ছে। একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধান আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে। এর বাইরে অনির্বাচিত কেউ আসতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান ক্ষমতা না নেবে, সেটা পরিবর্তন হবে না। একজন নির্বাচিতের জায়গায় আরেকজন নির্বাচিতই আসতে হবে। জানার পরেও কেন সাংবিধানিক জটিলতার সৃষ্টি করা হচ্ছে। উদ্দেশ্যটা কি? তার মানে এ দেশের গণতান্ত্রিক ধারাটাকে নষ্ট করা। দেশ যে দীর্ঘদিন ধরে সুষ্ঠুভাবে চলছে সেটাকে নষ্ট করা। তারা কি গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা চান, অর্থনৈতিক উন্নতি চান, দেশের মানুষের কল্যাণ হোক সেটা চান? নাকি ২০০৭ সালের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আবার সেই জরুরি অবস্থা, আবার সেই ধরপাকড় সেগুলো চায়?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সদ্ভাব রয়েছে। কিন্তু ভারত একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন দেশ। যার নিজের সার্বভৌমত্ব আছে। কাজেই তারা কি করবে, না করবে, সেটা সম্পূর্ণ তাদের ওপর। আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে। শুধু এইটুকু বলতে পারি।

ঢাকা-১৭ আসনে দলের প্রার্থীকে সমর্থনের আহ্বান

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটু সমর্থন দিয়েন আমাদের গুলশানে (ঢাকা-১৭-এর আওতাভুক্ত এলাকা)। আবার ইলেকশন কমিশন বলবে… অবশ্য আমি দলের সভাপতি হিসেবে আমার অধিকার আছে আমার প্রার্থীকে তুলে ধরা।

আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই

আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, কী এমন পরিস্থিতিতে পড়লেন যে নির্বাচন আগে দিয়ে আপনাদের মুক্তি দিতে হবে? নির্বাচন যখন সময় হবে তখন হবে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী যখন নির্বাচন হওয়ার সুনির্দিষ্ট সময় আছে সেই সময়ই নির্বাচন হবে, এটা হলো বাস্তবতা। অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখেছি। আপনারা কি চান না এই গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকুক।

ওরা আন্দোলন করছে করুক

সময় মতো নির্বাচন হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইলেকশন যখন হওয়ার হবে। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দেবে। জনগণ ভোট দেবে। যদি আমাকে ভোট দেয় আমি আছি। না হলে নেই। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এটাকে বাস্তবায়ন করতে হবে ২০২৬ সালের মধ্যে। এই ২৬ সালের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন করার মতো সক্ষমতা কার আছে বা কে এটা পারবে? জনগণ তাকে বেছে নেবে। আমার কোনও কিছু করার নেই। এখানে আমার কোনও ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। কাজেই আপনাদের এত টেনশন করার কিছু নেই। তারা (বিরোধীরা) কিছু তো কথা বলবেই। আর বললে তো ভালোই। ওরা আন্দোলন করছে করুক। দেখি আমরা। আমি জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। অন্য কিছুতে নয়।

ডাকাতরা আমাদের ভোট চোর বলে

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে গণতন্ত্রের প্রবক্তা সেজেছে স্বাভাবিকভাবে তারা কখনোই এদেশের কল্যাণ চাইবে না। তারা একটা ঘোলাটে পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইবে। সেখানে দেশি-বিদেশি নানা রকমের লোকই থাকবে। তারা ঘোট পাকাবে। আমি মনে করি আমাদের দেশের সচেতন নাগরিক তারা এসবকে কেন গুরুত্ব দেবে। মানুষের যদি পছন্দ হয় আমাকে ভোট দেবে, না হয় না দেবে। না দিলে নেই। আমি থাকবো না। আমিও কী ভোট চুরি করতে যাবো? দুর্ভাগ্য হলো আমরা ভোটের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করলাম আর আমাদের যারা ভোট চোর বলে, যারা হলো ভোট ডাকাত। যাদের উত্থানটাই হলো ডাকাতি করে, খুন করে হত্যা করে।

বাইরে সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশকে দমবন্ধ পরিবেশ বলে উল্লেখ করায় সাংবাদিকদের কাছে উল্টো প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দম বন্ধ কেন বলছেন? কেন দম বন্ধ দম বন্ধ পরিবেশ বলা হচ্ছে। বাইরে সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে। (সংবাদ সম্মেলনের সময় ঢাকায় হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল) সুন্দর বাতাস বইছে। তবে, হ্যাঁ বিদ্যুৎ নিয়ে কিছুটা সমস্যা ছিল। সেটা ঠিক হয়ে আসছে। মূল্যস্ফীতির বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

মজুতদার খুঁজে দিন, ব্যবস্থা নেবো

বাজার সিন্ডিকেটের কথা স্বীকার করে এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, সুযোগসন্ধানী কিছু লোক তো থাকেই। সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ সরবরাহ থাকার পরে যখন দাম বাড়ে.. কিছু লোক তো মজুতদারি করে। ইচ্ছে করে মজুতদারি করে দাম বাড়ায়। যারা এভাবে মজুতদারি করে কালোবাজারি করার চেষ্টা করে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারাও (গণমাধ্যম) খুঁজে বের করে দেন। কোথায় কে মজুত করলো..। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

কাঁচা মরিচ ফর্মুলা

মৌসুম অনুযায়ী জিনিসপত্রের দাম বাড়ে কমে এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্ষাকালে কেউ ক্ষেতে কাঁচা মরিচ তুলতে যেতে পারে না। কাঁচা মরিচের দাম বাড়লে সবাই চিৎকার করে। আমি সবাইকে আহ্বান করবো- কাঁচা মরিচ কিনে রোদে শুকিয়ে রেখে দিন। বর্ষাকালে যখন দাম বাড়বে.. ওটাকে একটু পানিতে রাখতেই তাজা হয়ে যায়। আবার রান্না করে খাওয়া যায়। সহজ বুদ্ধি। কাজেই ওইগুলি শুকান। শুকিয়ে রেখে দিন। অতিরিক্ত টমেটো হয়েছে, রোদে শুকিয়ে রেখে দিন। সানড্রাই টমেটো তো বিদেশে ভীষণভাবে চলে। আমরাও সব কিছু করবো। পেঁয়াজেও তাই। উৎপাদন হলে সংরক্ষণের ব্যবস্থা।

সবাইকে সাধ্যমতো চাষাবাদ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নিজেরা ছাদের ওপরে একটি কাঁচামরিচ গাছ যদি লাগান, আমি গাড়ি বারান্দার ছাদের ওপর লাগিয়েছি, আজ দেখলাম খুব সুন্দর ফুল আসছে। বর্ষা আসতে আসতে আমার কাঁচামরিচ হবে। আমার কেনা লাগবে না। ওখান থেকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে পাবো। এ রকম যদি সবাই করে তাহলে তো কষ্ট থাকে না। যার যার জায়গায় সে সে এটা করলে আমাদের কষ্টটা দূর হয়ে যায়। আমাদের মাটিও তো চমৎকার উর্বর। এ সময় প্রধানমন্ত্রী হেসে দিয়ে বলে ওঠেন, ‘এখন কাঁচা মরিচ ফর্মুলা দিলাম’।

ব্রিকস জোটে যোগ দেবে বাংলাদেশ

ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার, আদ্যক্ষরের সমন্বয়ে গঠিত আঞ্চলিক অর্থনীতির একটি সংঘ ব্রিকস-এ বাংলাদেশ যোগ দেবে বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য আন্তর্জাতিক কোনও মুদ্রা চালু করার সিদ্ধান্ত আছে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদার ব্যাপারীকে জাহাজের খবর নিতে বলছেন। এটা তো বড় বড় ধনী দেশ, উন্নত দেশ তারা করে। তবে ব্রিকস-এ আমরা যোগ দেবো এই কারণে যে ব্রিকস যখন প্রথম থেকে প্রস্তুতি নেয় আমরা এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা ফাউন্ডার মেম্বার হতে পারিনি। আমরা এখন চেয়েছি এটার মেম্বার হতে। আমরা চাচ্ছি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনও একটার ওপর নির্ভরতা যেন না হয়। কাজেই অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আমাদের ‘বিনিময়ের’ সুযোগটা থাকে। আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো যেন আমরা সহজে ক্রয় করতে পারি। আমাদের দেশের মানুষের কষ্ট লাঘব করতে পারি। সেই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যতটুকু সম্ভব আমরা এর সঙ্গে আছি।

তিনি বলেন, এখানে আমরা দেখবো বিকল্প কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যবহারের ব্যবস্থা কেউ যদি নেয় আমরা তার সঙ্গে আছি। ইতোমধ্যে আমরা কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা নিজস্ব অর্থের বিনিময় ক্রয়-বিক্রয় করতে পারি। সেই পদক্ষেপটাও আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। শুধু ডলারের ওপর নির্ভরশীল নয়। নিজের অর্থে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিনিময়টা যেন করতে পারি। কেনাবেচা যা লাগে করতে পারি। সেদিকে আমাদের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া আছে। যখন ভালোভাবে এটা কার্যকর হবে তখন দেখতে পারবেন।

যে মুদ্রায় সুবিধা সেখানে যাবো

বিশ্বে অনেক মুদ্রার প্রচলন রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে তো অনেক ‍মুদ্রাই চলে। ডলারও যেমন চলছে, ইউরোপিয়ান দেশগুলো ইউরো দিয়ে চালায়। এ রকম বিভিন্ন ক্ষেত্রে আছে। যেখানে আমাদের সুবিধা হবে সেখানে সম্পৃক্ত হবো। আমাদের জন্য যেটা কল্যাণকর হবে সেটা করবো। একটার ওপর নির্ভরশীল থাকার যুগ আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে। এটা হলো বাস্তবতা। তবে সেটা এখনও সেভাবে তৈরি হয়নি। যদি হয় আমরাও আমাদেরটা বিবেচনা করবো। যখন যেটা যেভাবে দরকার সেভাবে করবো।

জাতীয়-এর আরও খবর