এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কক্সবাজারের ৩৪ কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১৫১৯৮ জন

  বিশেষ প্রতিনিধি    06-11-2022    133
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কক্সবাজারের ৩৪ কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১৫১৯৮ জন

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে ৬ নভেম্বর রোববার থেকে। লিখিত পরীক্ষা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এরপর ১৫ ডিসেম্বর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা, যা শেষ হবে ২২ ডিসেম্বর। অর্থাৎ ৩৭ দিনেই শেষ হবে এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা। প্রথমদিনে এইচএসসিতে বাংলা প্রথম পত্র, আলীমে কুরআন মাজিদ ও ভোকেশনালে বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা অনুষ্টিত হবে। এবারে কক্সবাজার জেলার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৩৪টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১৫ হাজার ১৯৮ জন। এবারও এইচএসসিতে সব বিষয়ে পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে গতবারের চেয়ে এবার বিষয় বেড়েছে। এইচএসসিতে একটি বিষয় (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) বাদ দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ব্যাবহারিকসহ বিষয়গুলোতে পরীক্ষার্থীরা প্রতি বিষয়ে ৪৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নেবে। এর মধ্যে রচনামূলকে ৩০ ও নৈর্ব্যত্তিকে থাকবে ১৫ নম্বর। আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ব্যাবহারিক ছাড়া বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা প্রতি বিষয়ে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নেবে। এর মধ্যে রচনামূলক পরীক্ষায় ৪০ এবং নৈর্ব্যত্তিক পরীক্ষায় থাকবে ১৫ নম্বর। তবে বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা হবে ৫০ নম্বরে। ব্যাবহারিক ছাড়া বিষয়গুলোতে রচনামূলকের ৪০ নম্বরকে ৭০ নম্বরে এবং নৈর্ব্যক্তিকের ১৫ নম্বরকে ৩০ নম্বরে রূপান্তর করে ফল প্রস্তুত করা হবে। আর ব্যাবহারিকসহ বিষয়গুলোর রচনামূলকের ৩০ নম্বরকে ৫০ নম্বরে এবং নৈর্ব্যক্তিকের ১৫ নম্বরকে ২৫ নম্বরে রূপান্তর করে ফল প্রস্তুত করা হবে। অন্যদিকে বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের ৫০ নম্বরকে ১০০ নম্বরে রূপান্তর করা হবে।

এবারে কক্সবাজার জেলার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৩৪টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ১৫ হাজার ১৯৮ জন। তারমধ্যে এইচএসসিতে ১৮ টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ১১ হাজার ৬৩৪ জন, আলিমে ৮ টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ২ হাজার ২৬৩ জন এবং বিএম/ভোকেশনালে ৮ টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ১ হাজার ৩০১ জন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের শিক্ষা ও আইসিটি কার্যালয় থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।

প্রাপ্ত তথ্যমতে কেন্দ্রওয়ারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হলো, এইচএসসিতে কক্সবাজার সরকারি কলেজে ১ হাজার ৪২৭ জন, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজে ১ হাজার ২৮৪ জন, ঈদগাহ রশিদ আহমদ কলেজে ৯২৩ জন, কক্সবাজার সিটি কলেজে ১ হাজার ১৩১জন, রামু সরকারি কলেজে ৯১৭ জন, চকরিয়া সরকারি কলেজে ৫২২ জন, বদরখালী কলোনীজেশন হাই স্কুলে ৩১৮ জন, চকরিয়া সিটি কলেজে ৩৪৪ জন, চকরিয়া মহিলা আবাসিক কলেজে ২৪৫ জন, ডুলাহাজারা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬১৩ জন, পেকুয়া শহীদ জিয়া বি, এম, ইউ, আই’তে ৩৮৭ জন, কুতুবদিয়া সরকারি কলেজে ৬৪৭ জন, মহেশখালী কলেজে ৪০৫ জন, মহেশখালী সরকারি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজে ৫২৬ জন, উখিয়া কলেজে ৫৯৬ জন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজে ৫৮৪ জন, টেকনাফ এজাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৬০ জন ও হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩০৫ জন।

আলীম পরীক্ষায় কক্সবাজার ইসলামিয়া মহিলা কামিল মাদ্রাসায় ৩৪৫ জন, আদর্শ মহিলা কামিল মাদ্রাসায় ৩৮৭ জন, চকরিয়া আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসায় ৫৬৮ জন, মহেশখালী পুটিবিলা ফাযিল মাদ্রাসায় ১৮০ জন, টেকনাফ রঙ্গীখালি ফাযিল মাদ্রাসায় ১২২ জন, পেকুয়া আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসায় ১৯৪ জন, রাজাপালং ফাযিল মাদ্রাসায় ৩৯৮ জন ও কুতুবদিয়া বড়ঘোপ মাদ্রাসায় ৬৯ জন।

এইচএসসি (বিএম), এইচএসসি(ভোকেশনাল), ও ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় কক্সবাজার সিটি কলেজে ২৬২ জন, কক্সবাজার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ৪৪ জন, রামু সরকারি কলেজে ৩৮৪ জন, উখিয়া নুরুল ইসলাম বি, এম টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ১৯৫ জন, মহেশখালী আলমগীর ফরিদ টেকনিক্যাল এন্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজে ৮৩ জন, উখিয়া কলেজে ৮৪ জন, পেকুয়া শহীদ জিয়া বি এম আই’তে ১৬৩ জন ও কুতুবদিয়া টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজে ৮৬ জন। এদিকে, ২০২২ সালের এইচএসসি, আলিম ও ভোকেশনাল পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে, নুকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত ২৭ অক্টোবর সকাল ১১টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় প্রত্যেক কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিয়োগ, কেন্দ্রের আশেপাশে ১৪৪ ধারা জারী, ৪টি ভিজিলেন্স টিম গঠন, কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, কক্সবাজার সরকারী মহিলা কলেজে পরীক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় আসন সংকটের কারণে পার্শ্ববর্তী সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

এইচএসসি পরীক্ষার ঘোষিত সময়সূচিতে বলা হয়, পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনি (এমসিকিউ) ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশের পরীক্ষা হবে। এমসিকিউ অংশের জন্য সময় ২০ মিনিট এবং সৃজনশীল অংশের জন্য সময় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এই দুই অংশের মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। সময়সূচিতে মোট ১১ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা পুনর্বিন্যাস পাঠ্যসূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এইচএসসিতে এবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা না নিয়ে তা সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হবে।

সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও গত বছর করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হয় প্রায় ৯ মাস পর নভেম্বরের মাঝামাঝি আর এইচএসসি পরীক্ষা হয় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।

সারাদেশ-এর আরও খবর