৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার আইস পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

  বিশেষ প্রতিনিধি    09-08-2023    114
৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার আইস পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার ক্রিস্টাল মেথ আইস পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। দন্ডিত আসামীকে একইসাথে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

বুধবার (৯ আগস্ট) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।

একই কার্যালয়ের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন। রাষ্ট্র পক্ষে এপিপি অ্যাডভোকেট দীলিপ কুমার ধর, আসামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন সাহীব মামলাটি পরিচালনা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামী হলো : কক্সবাজারের টেকনাফের জাদিমুড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প-২৭ এর, ব্লক বি/৩ এর মৃত ইব্রাহিমের পুত্র রোহিঙ্গা সৈয়দুল ইসলাম। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :

২০২২ সালের ১৯ মে রাত ১ টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফস্থ ২, বিজিবি ব্যাটালিয়নের একটি টিম টেকনাফের দমদমিয়া বিওপি’র উত্তর দিকে আইয়ুব এর জোড়া বিএসপি খাল এলাকায় এক অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা সৈয়দুল ইসলামকে আটক করে। পরে তার কাছে এক কেজি ৬০ গ্রাম প্রথম শ্রেণির মাদক ক্রিস্টাল মেথ আইস উদ্ধার করা হয়। যার মূল্য ৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা।

এ ঘটনায় ২, বিজিবি ব্যাটালিয়নের নায়েক মোঃ আনোয়ারুল হক বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি মাদক মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৭১/২০২২ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৪৬৪/২০২২ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৫৯/২০২৩ ইংরেজি।

বিচার ও রায় :

মামলাটি তদন্ত করে আসামী সৈয়দুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ৩০ জুন তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন।

মামলাটি ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারী আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু করা হয়। মামলায় ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, সাক্ষীদের আসামী পক্ষে জেরা, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, আলামত পর্যালোচনা, আসামীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মামলাটি রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।

রায় ঘোষণার দিনে আসামী রোহিঙ্গা সৈয়দুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) এর ১০(গ) ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে দন্ডিত আসামীকে একইসাথে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

দন্ডিত আসামী রোহিঙ্গা সৈয়দুল ইসলামকে সাজা ভোগ শেষ হলে বিধি মোতাবেক তাকে মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কক্সবাজারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলাটি চার্জ গঠনের মাত্র ৬ মাস ২৩ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করা হয়েছে।

সারাদেশ-এর আরও খবর