টেকনাফে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

  বিশেষ প্রতিনিধি    16-02-2023    226
টেকনাফে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে । ওই শিক্ষকের নাম কামাল উদ্দিন । তিনি উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন । প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয়ে এমন গর্হিত কাজ করার সাহস পাচ্ছে বলে জানা গেছে ।

অভিযোগ উঠেছে ,সহকারি শিক্ষক কামাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে শ্রেণি কক্ষে ক্লাস করানোর সময় বড় মেয়েদের গালধরে টানাটানি করে এবং গোপন অঙ্গে হাত দিয়ে যৌন হয়রানি করে । প্রতিনিয়ত ছাত্রীদের সঙ্গে এধরণের কুরুচিপূর্ণ গর্হিত কাজ করে বলে একাধিক ছাত্রীরা জানিয়েছে ।

হালিমা আক্তার (ছদ্মনাম) নামে এক শিক্ষার্থী জানান,কামাল উদ্দিন স্যার, আমাদের গাল টেনেটেনে জামাইকে জিজ্ঞেস করে । সব সময় ওই শিক্ষক আমাদের উপর অত্যাচার চালায় । এগুলি আমাদের লজ্জা লাগে । আমরা ওনার শাস্তি চাই । ওই স্কুল থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক কামাল উদ্দিনকে সরিয়ে দেয়ার দাবি তুলেছেন ছাত্রছাত্রীরা ।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আড়াইটার দিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে সরেজমিনে গেলে ,গণমাধ্যমকর্মী দেখে ক্লাস থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত শিক্ষক কামাল উদ্দিন । পরে কয়েকজন ছাত্রছাত্রী দৌঁড়ে এসে এ প্রতিবেকদকে জানান, তিনি বাথরুমে ঢুকে দরজা আটকিয়ে দিয়েছে । এক ঘন্টা অপেক্ষা করেও অভিযুক্ত শিক্ষক বাথরুম থেকে বের না হওয়ায় সরাসরি কথা বলার সুযোগ হয়নি । পরে অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলফোনে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক কামাল উদ্দিন বলেন এগুলো ষড়যন্ত্র । ইতিপূর্বে কেন মুচলেকা দিয়েছেন জানতে চাইলে কোনো সৎ উত্তর দিতে পারেননি তিনি । সাংবাদিক দেখে ক্লাস ছেড়ে বাথরুমে পালানোর কথা জানতে চাইলে বলেন, মেম্বারের সাথে নাকি বাথরুমের ভেতরে কথা বলতে গেছেন ।

সরেজমিনে আরও জানা যায়, অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা বলেন,ওই শিক্ষক আসার পর থেকে ওনার বিরুদ্ধে এধরণের অভিযোগ একাধিবার উঠেছে,কিন্তু রহস্যজনক কারণে প্রতিবারই ধামাচাপা পড়ে যায়। শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি একবারও । মূলত প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয়ের কারণেই ওই শিক্ষক এসব ঘৃণিত কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন ইতিপূর্বে অভিযুক্ত কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন,এধরণের কাজের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেই তো মুচলেকা নেয়া হয়েছে । প্রধান শিক্ষকের প্রশ্রয়ের কথা জানতে চাইলে তিনি চুপ করে থাকেন,কোনো কথা বলতে রাজি হননি ।

টেকনাফ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশীষ বোস বলেন,অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.কামরুজ্জামান বলেন,লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সারাদেশ-এর আরও খবর