বিদেশি ফল রামবুটান চাষে সফল ২ কৃষক

  বিশেষ প্রতিনিধি    12-09-2022    114
বিদেশি ফল রামবুটান চাষে সফল ২ কৃষক

বিদেশি ফল রামবুটান চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নরসিংদীর শিবপুরের কৃষক জামাল উদ্দিন ও মজনু মিয়া। তাদের সফলতা দেখে এ ফল চাষে অনেকের মধ্যেই আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এখন তাদের উৎপাদিত চারা যাচ্ছে সারাদেশে। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার অষ্টাআনী গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন ও মজনু মিয়া। কাজের জন্য তারা মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন। সেখান থেকে এক কেজি রামবুটান ফল এনে খাওয়ার পর বীজ রোপণ করেন। রোপণের সাত থেকে আট বছর পর ফল ধরেছে গাছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে রামবুটানে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়ামসহ ভিটামিস ও মিনারেল রয়েছে। বিদেশি ফল হলেও বাংলাদেশে আপেল, কমলা, খেজুর, আঙ্গুর পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। কিন্তু রামবুটান খুব একটা পাওয়া যায় না। সেই রামবুটানের চাষ করেই আশাতীত ফলন পাওয়ায় খুশি কৃষক জামাল ও মজনু মিয়া। দুইজনের প্রায় ১০টি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে রামবুটান। রামবুটান চাষে তাদের সফলতা দেখে চারা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। যোগাযোগ করে দেখতে এসে শখের বশে নিজেদের সাধ্যমতো চারা নিয়েও যাচ্ছেন অনেকে। প্রকারভেদে এক হাজার ৫০০ থেকে তিনি হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি চারা। এখন রামবুটানের চারা বিক্রি করাই মূল পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন জামাল উদ্দিন ও মজনু মিয়া। রাজশাহী থেকে রামবুটানের চারা নিতে আসা জসিম উদ্দিন জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারেন বিদেশি ফল রামবুটান নরসিংদীতে উৎপাদিত হচ্ছে। তা দেখে মজনু মিয়ার কাছ থেকে কিছু ফল খেয়ে স্বাদ পাওয়ায় দুই হাজার টাকা করে ২০টি রামবুটানের চারা কিনে নেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে রামবুটানের চারা কিনতে আসা বশির আহমেদ জানান, তার এক আত্মীয় সৌদি আরবে থাকেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন শিবপুরে রামবুটান উৎপাদন এবং এর চারা বিক্রি হচ্ছে। ঐ আত্মীয়ের পরামর্শে তিনি চারা নিতে আসেন। তিনি মজনু মিয়ার কাছ থেকে ১০টি চারা কিনেছেন। রামবুটান চাষি মো. জামাল উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা অবস্থায় একাধিকবার এই ফল তিনি খেয়েছেন। আর ফলটি খেয়ে স্বাদ পাওয়ায় দেশে চাষ করার চিন্তা করেন। এজন্য দেশে আসার সময় এক কেজি পাকা ফল নিয়ে আসেন। এরপর ঐ পাকা ফলের বীজ থেকে চারা উৎপাদন করেন। সেই চারাই এখন রূপান্তরিত হয়েছে পরিপক্ব গাছে। গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে রামবুটান ফল। এ দল দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন উৎসাহী জনতা। তিনি আরো জানান, একটি বিদেশি ফল দেশের মাটিতে চাষ হচ্ছে তাই কৌতূহলবশত দেখতে এসে চারা নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তিনি এবং মজনু মিয়া দুইজনের বাড়িতেই রামবুটানের নার্সারি গড়ে তুলেছেন। এর চারা রোপণের সাত থেকে আট বছরের মধ্যেই গাছে ফল ধরে। ১২ মাসই এ ফল পাওয়া ধরে। শুধু জৈব সার ব্যবহারের মাধ্যমেই এ ফল উৎপাদন করছেন তারা। এ বিষয়ে নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন বলেন, এ ফলের চাষ সম্প্রসারণে একটু সময় লাগছে। কারণ এ গাছগুলো পেঁপে গাছের মতো। বীজ থেকে চারা হলে স্ত্রী ও পুরুষ গাছের বিষয় আছে। শুধু তাই নয় এতে দুইটি গাছের মধ্যে পরাগায়নের বিষয় রয়েছে। তাই ফল ধরেছে এমন গাছ থেকে যদি কলমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা যায় তাহলে ফল ধরার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে। আর সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।

সারাদেশ-এর আরও খবর