পা দিয়ে লিখে এসএসসি দিচ্ছে অদম্য মেধাবী মানিক

  বিশেষ প্রতিনিধি    15-09-2022    124
পা দিয়ে লিখে এসএসসি দিচ্ছে অদম্য মেধাবী মানিক

হাত না থাকার পরও পা দিয়ে লিখেই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বুকে লালন করে এগিয়ে যাচ্ছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের চন্দ্রখানা গ্রামের ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ময়নার ছেলে অদম্য মেধাবী মানিক রহমান। মানিক রহমান ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ফুলবাড়ী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের ৭ নং কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষার খাতায় মানিক রহমান ডান পা দিয়ে লিখলেও লেখা ঝকঝকে ও স্বাভাবিক হাতের লেখার চেয়েও অনেক ভালো। তার পায়ের লেখা দেখে অনেকে চমকে যায়। অনেকে বলেন সৃষ্টিকর্তা তার হাত না দিলেও পায়ের শক্তি দিয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব খোদেজা বেগম বলেন, মানিক রহমান পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে এটা জানতে পেরে আমি তার কাছে ছুটে যাই। সে অনেক সুন্দরভাবেই পরীক্ষার খাতায় লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে। এটা আশ্চর্য্যজনক। আমি মানিককে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, সে ভালো পরীক্ষা দিচ্ছে। ফুলবাড়ী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্র সচিব রাহিবুল ইসলাম বলেন, মানিক রহমান পা দিয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখে ভালোভাবেই পরীক্ষা দিচ্ছে। সে বসে না থেকে অনবরত লিখে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, মানিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় আমরা পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাকে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আরো ২০ মিনিট বাড়তি সময় দিচ্ছি। আশা করছি মানিক রহমান এবারের এসএসসি পরীক্ষা ভালো ফলাফল করবে। আমি তার সফলতা কামনা করছি। ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার জানান, প্রতিবন্ধী মানিক রহমান অদম্য মেধার অধিকারী। সে জেএসসিতে পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ অর্জন করে অদম্য মেধার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। তিনি আরো বলেন, মানিক রহমানের পা দিয়ে পরীক্ষার খাতায় লেখার অদম্য মেধার মূল্যায়ন করে তাকে আমরা বিদ্যালয়ে একটি কাঠের টেবিল মানিককে দিয়েছি। সেই টেবিলে বসে সে ক্লাস করতো। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি। মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ময়না বলেন, আমার প্রতিবন্ধী ছেলে মানিক কষ্ট করে পা দিয়ে পরীক্ষায় খাতায় লিখে জেএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করে আমাদের বুক আনন্দে ভরে দিয়েছে। মানিক পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। এবার এসএসসিতে ছেলে মানিক রহমান জিপি-এ-৫ পাবে আমি আশা করছি। মানিকের মা অধ্যাপক মরিয়ম বেগম জানান, আমাদের ছেলে মানিক রহমান কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা তার বাবা মা হিসেবে মানিকের স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানিক রহমান বলেন, আমার ইচ্ছা ও বাবা-মা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রেরণায় আমি লেখাপড়া করে ভালো ফলাল করার চেষ্টা করছি। এসএসসির বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা বেশ ভালোই হয়েছে। আমি ভবিষ্যত একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই।

সারাদেশ-এর আরও খবর