আরসা ঠেকাতে এককাট্টা ১১ সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী

  বিশেষ প্রতিনিধি    25-01-2023    156
আরসা ঠেকাতে এককাট্টা ১১ সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের ঠেকাতে এককাট্টা হয়েছে ছোট-বড় ১১টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। প্রায় প্রতিদিনই গ্রুপগুলোর সঙ্গে আরসার গোলাগুলি হচ্ছে। সর্বশেষ গত রোববারও উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ায় শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে সংঘর্ষের কারণও এটি। রোহিঙ্গা নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্যমতে, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সাড়ে তিন মাসে উখিয়ার একাধিক আশ্রয়শিবিরে আরসার সঙ্গে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনীর সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ২৩ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন রোহিঙ্গা মাঝি ও পাঁচজন আরসার সদস্য। বাকিরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

রোহিঙ্গা নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, আরসা ঠেকানোর নেতৃত্বে আছে মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমার থেকে মাদক (ইয়াবা ও আইস) সরবরাহের অন্যতম নিয়ন্ত্রক নবী গ্রুপের প্রধান নবী হোসেন। এই নবী হোসেন নিয়ন্ত্রণ করেন ছোট ৯টি গোষ্ঠী।

এগুলো হচ্ছে মাস্টার মুন্না, মো. আসাদ, মো. জুবাইর, মো. হাকিম, মো. জাবু, মো. ইসলাম, মো. মুমিন, মো. জাকির ও শফিউল্লাহ বাহিনী। গ্রুপগুলোর সদস্যরাই কয়েকটি আশ্রয়শিবিরে আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিসহ ২৮ সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবিতে পোস্টার সাঁটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর কয়েক মাসে, দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে।

উখিয়ার একাধিক আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালের দিকে পুরো আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ছিল আরসার হাতে। সাধারণ রোহিঙ্গারাও আরসাকে নানাভাবে সহযোগিতা দিত। কিন্তু রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে বিপাকে পড়ে আরসা। এর ফলে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সমর্থন হারাতে থাকে তারা। এখন আরসা আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চাইছে। কিন্তু আরএসও, নবী হোসেন গ্রুপসহ ১১টি রোহিঙ্গা বাহিনী এককাট্টা হওয়ায় আরসা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। সুত্র’ প্রথম আলো

সারাদেশ-এর আরও খবর