চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ: ট্রেন চলবে ১২০ কিলোমিটার গতিতে

  বিশেষ প্রতিনিধি    10-05-2023    89
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ: ট্রেন চলবে ১২০ কিলোমিটার গতিতে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ দিয়ে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর। আগামী সেপ্টেম্বরেই ট্রেনে করে কক্সবাজারে যাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

শনিবার (০৬ মে) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব তথ্য জানান। কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন ও ফেরি চালুর বিষয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।

সভায় জানানো হয় সেপ্টেম্বর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপন হবে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে। ফলে তড়িঘড়ি করে এ সেতুর সংস্কার কাজ বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। যাতে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন নির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন করতে পারেন।

রেল সচিব হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বর্তমান সরকার রেলপথের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন হচ্ছে। নতুন রেলপথ দিয়ে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। মানুষ প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পর্যটন শহরে যাবেন।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কারকাজের সময় সেতুর বিকল্প হিসেবে যাতায়াতের জন্য ফেরি চালু করা হবে। সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকলে মানুষের সাময়িক অসুবিধা হবে। তবে সংস্কারকাজ হয়ে গেলে সেটা আর থাকবে না। আর ২০২৮ সালে নতুন সেতু হলে দুর্ভোগে দূর হয়ে যাবে।’

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, পূর্ব পটিয়া, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া শহরের চান্দগাও এলাকাসহ কয়েক লাখ মানুষ নির্ভরশীল কালুরঘাট সেতুর ওপর। শহর এলাকা থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ এ সেতু পার হতে দশ মিনিটের পথ লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে সেতুটি। এর বিভিন্ন জায়গায় জং ধরে যানবাহন ও ট্রেন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে ৯২ বছরের পুরনো কালুরঘাট সেতুটিতে ষাট কোটি টাকা ব্যয়ে আরেক দফা সংস্কার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে সেপ্টেম্বরে। ১০০ কিলোমিটারের এই ডুয়েলগেজ রেলপথের মধ্যে ৭০ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। বাকি ১৭ শতাংশ কাজের মধ্যে ৩০ কিলোমিটার রেললাইন এবং ৮৬টি স্টেশন ভবন নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।

সভায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘সেতুর বিকল্প হিসেবে নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে। এ জন্য দু’টি ফেরি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ফেরি রাখা হয়েছে বিকল্প হিসেবে।’

তবে সভায় জুন মাসে সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ও পৌর চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম। দু’টি ফেরির পরিবর্তে চারটি ফেরি চালুর পরামর্শ দেন দুই জনপ্রতিনিধি।

বর্তমানে কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে দশ টন ভারী ইঞ্জিন চলাচল করতে পারে। এ সময় গতি থাকে সর্বোচ্চ দশ কিলোমিটার।

সারাদেশ-এর আরও খবর